সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হবে না: সেনাবাহিনী প্রধানের ঘোষণা

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নিশ্চিত করেছেন যে, র‍্যাবে প্রেষণে নিয়োজিত অবস্থায় যদি কোনো সেনাবাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে শান্তিরক্ষা মিশনে নির্বাচিত করা হবে না। তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়, যেখানে তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এই সফরটি ছিল সেনাবাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ভূমিকা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রভাবশালী অবস্থান তুলে ধরা হয়। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে এবং তারা বিভিন্ন শান্তি মিশনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, যারা শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান নিয়ে আলোচনা করেন। জেনারেল ওয়াকার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি সদস্যদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং নীতি নির্ধারণী ও ফোর্স কমান্ড পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য গুরুত্বারোপ করেন।

জেনারেল ওয়াকার তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের সদস্যরা যদি এমন কোনো অভিযোগে জড়িত হন, তাহলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হবে না।”

এছাড়া, তিনি বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারের দিকনির্দেশনার ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের উপর আলোকপাত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারের উদ্যোগগুলোর সুফল পেতে কাজ করছে।

সেনাপ্রধান নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনসের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জেয়ান পিয়ারি ল্যাকরোয়িক্স, ডিপার্টমেন্ট অব অপারেশনাল সাপোর্টের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খের, এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণের বিষয়গুলো উঠে আসে।

সেনাবাহিনী প্রধানের এই ঘোষণা নিশ্চিত করে যে, বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা মিশনে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের জায়গা নেই। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি এবং শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারকে আরও সুসংহত করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আরও সক্রিয় এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page