চিনতে পারো না কি?
এম এ জলিল
আড়াই যুগ পর হঠাৎ দেখা, যেখানে অসংখ্য সন্ধ্যা সাক্ষীদেবে,
একই মাটি, একই ঘাস, পথের বাঁকটাও ঠিক আগের মতো,
শুধু বদলেছ তুমি—আঁচড় পড়েছে জীবনের ঘূর্ণিপাকে।
মনে পড়ে—
আমরা ছিলাম নদীর বাঁকে, সেই ঘূর্ণির ছোঁয়ায়
সন্ধের আলোয়, ম্লান শঙ্খচূর্ণ মন্দিরের পাশে।
নিষিদ্ধ ছিল দেশ, গোপনে রক্ষিত আবেগের অলিন্দে
ভাঙা মন্দির, বেদির পাষাণ, আর তুমুল স্পর্শ—
তোমার দু’চোখে তখন ধোঁয়ার ভীড়,
দেবী মানবীর প্রথম দ্বিধা, কাঁচা আবেগের মায়া।
একবার হাত ছুঁয়ে ছিলে—যেন প্রথম শপথ,
আমৃত্যু গোপন এই স্পর্শ, এই শিহরণ।
কৈশোরের খেলার মাঝে শোরগোল ভরা হাওয়ায়
লুকোচুরির খেলা শেষেও, তোমাকে খুঁজে পাইনি।
তবু আজ, দূরের সেই আয়নায় দেখা মুখ,
চোরা চাহনিতে আটকে থাকা রহস্য,
একই আয়না, সেই মুখ, আজও চেনা।
চিনতে পারো না কি? আমার সেই কৈশোরিক চাওয়া?
যে দিনগুলো একেকটা সন্ধ্যার মতো ফিকে হয়ে গেছে,
তোমার চোখে কি আজও রয়েছে ধোঁয়াশার আভাস?
চেনা সেই মুখ, যেন আবছা অচেনার মাঝে
হারিয়ে ফেলা সময়ের ছায়া হয়ে থাকে।
তুমি কি আমার এই পরিচিত অপরিচয়ের মাঝে
ফিরে আসতে পারো? বাঁকবদলের পথে দাঁড়ানো—
অজানা স্বপ্নের হালকা সুরে গাঁথা ঐ মুখ, ঐ চোরা চোখ।
চেনা মুখের মাঝে আজও এক আভাস খুঁজে ফিরি,
চিনতে পারো না কি?