কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা থেকে একটি অস্বাভাবিক মামলা সামনে এসেছে, যেখানে ৬ বছরের শিশুসহ ৩ শিশুকে একটি মারামারি, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ও জাতীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলির মধ্যে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, কুলিয়ারচরের নোয়াগাঁও বেপারী পাড়া গ্রামের মো. আবুল হাসেম মাষ্টার তার প্রতিবেশী আ. ছামাদের ছেলে তমিজ উদ্দিনের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধে জড়িয়ে আছেন। এরই জেরে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবুল হাসেম বাদী হয়ে ৬ বছরের শিশু আবু সালমান, ৮ম শ্রেণির ছাত্র আবু হুরাইরা (১৩) এবং ইয়াছিন মিয়া (১৩) সহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, অভিযুক্তরা একত্রে মারামারি, ভাংচুর ও চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা মনির মিয়া অভিযোগ করেন, তার ৬ বছর বয়সী সন্তান আবু সালমানকে মামলায় আসামী করা হয়েছে, যদিও সে তখনও একা বাইরে যেতে ভয় পায়। তিনি আরও বলেন, “শিশুর বিরুদ্ধে এমন মামলা মিথ্যা ও অযৌক্তিক।”
তবে অভিযুক্ত তমিজ উদ্দিন বলেন, “আমাদের জমি দখলে রেখেছে আবুল হাসেম মাষ্টার। তাদের বিরুদ্ধে মোট ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, এবং দুইটি মামলায় আমরা অব্যাহতি পেয়েছি। এখন নতুন করে তিনটি শিশুকে মামলায় আসামী করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন আসক ফাউন্ডেশনের নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জোনাল অফিসের সভাপতি ডাঃ আবদুল লতিফ আরপিসি জানান, “শিশুদের বিরুদ্ধে মামলা করা একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন, যা শিশুদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করবে। লেখাপড়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি করবে এবং তাদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি, যেন দ্রুত তদন্ত করে শিশুদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।”
এ বিষয়ে আবুল হাসেম মাষ্টারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং তার বাড়িতেও পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনা এলাকাবাসী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলির মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে, এবং স্থানীয়রা দ্রুত ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন।