ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে শুরু হয়েছে খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড় ও পাটালির জন্য খ্যাত এই অঞ্চলের গাছিরা এবার প্রায় ৩ হাজার গাছ প্রস্তুত করেছেন রস আহরণের জন্য।
খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছিরা প্রতিদিন ভোরে বেরিয়ে পড়েন দড়ি, ছ্যান ও দা নিয়ে। প্রথমে গাছ ছুলে তৈরি করা হয় রস সংগ্রহের উপযোগী। এরপর নল স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হবে সুস্বাদু খেজুর রস আহরণ। কয়েকদিন পর মাটির হাঁড়িতে সংগ্রহ করা রস থেকে তৈরি হবে খাঁটি গুড় ও পাটালি।
স্থানীয় গাছিরা জানান, খেজুর রস সংগ্রহ অত্যন্ত কষ্টসাধ্য কাজ। দরিদ্র পরিবারগুলোই সাধারণত এ পেশায় নিয়োজিত হয়। যদুনন্দী ইউনিয়নের গাছি সাহাদৎ ফকির বলেন, “খেজুর রস থেকে গুড় তৈরি করে আমাদের সংসার চলে। তবে আধুনিকতার সঙ্গে এই পেশা বিলুপ্তির পথে।”
শীত মৌসুমে রস-গুড় উৎপাদন করে এ অঞ্চলের শতাধিক কৃষক পরিবার প্রায় ৫-৬ মাস জীবিকা নির্বাহ করে। স্থানীয়রা দাবি করেন, প্রশাসনের উদ্যোগে খেজুরের গুড়ের মেলা ও গাছি সমাবেশ আয়োজন করলে এর কদর বাড়ত এবং ভেজাল গুড় উৎপাদন বন্ধ হতো।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনিছুর রহমান বালী জানান, “গাছিদের আমরা মানসম্মত গুড় তৈরিতে উৎসাহিত করবো এবং রাসায়নিক মুক্ত উৎপাদন নিশ্চিত করতে পাশে থাকবো।”
খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং অর্থনৈতিক সচ্ছলতা অর্জনে গাছিদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।