নিজস্ব প্রতিবেদক, কিশোরগঞ্জ :
কিশোরগঞ্জ থেকে আশরাফুল ইসলাম তুষার
ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ—বাংলাদেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রামের এক অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাজহারুল হক। ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রথম দিকের ছাত্র এই সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহিদ মিনার নির্মাণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
১৯৪৬-৪৭ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তার রাজনীতির যাত্রা শুরু। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে জেল খাটাসহ সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে কিশোরগঞ্জে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করে স্থানীয় জনগণকে সংগঠিত করেন এবং রক্তপাতহীনভাবে কিশোরগঞ্জ মুক্ত করেন।
চিকিৎসা, সমাজসেবা, ও রাজনীতিতে প্রায় ৬৭ বছর অবিচল থেকে কাজ করেছেন তিনি। তার রচিত গ্রন্থ “আমার জীবন ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ-ঢাকার জীবনধারা” বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য দলিল।
ডা. মাজহারুল হকের জীবন থেকে জানা যায়, কিভাবে একজন সাধারণ ছাত্র থেকে ভাষা ও স্বাধীনতার জন্য নিবেদিত প্রাণ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা যায়। ভাষা আন্দোলনের সময় এক রাত্রিতে সহপাঠীদের সঙ্গে গেরিলা কৌশলে নির্মাণ করেন শহিদ মিনার, যা পরবর্তীতে বাঙালির প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠে।
২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, ঢাকার উত্তর কাফরুলের বাসায় মৃত্যুবরণ করেন এই ভাষাসৈনিক। মৃত্যুর পূর্বে তিনি বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন দেশের জন্য আত্মত্যাগের গুরুত্ব।
আজ, তার জীবন ও কর্ম আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সংগ্রামের মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় একটি জাতির স্বাধীনতা ও সম্মান।