ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রতিবেশির বাসায় চুরির অভিযোগে ভিন্ন ধর্মের দুই নারী-পুরুষ গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার তাদের আটক করা হলেও আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকালে আদালতের মাধ্যমে দুইজনকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া হিন্দু যুবক নরসিংদীর রায়পুর উপজেলার গকুল নগর এলাকার হরিদাস বিশ্বাসের ছেলে সুমন বিশ্বাস (৩৮) ও গ্রেফতারকৃত মুসলিম নারী একই উপজেলার দৌলতকান্দি এলাকার মোবারক খন্দকারের মেয়ে চৈতী বেগম (২৮)।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের কমলপুর র্যাব অফিস সংলগ্ন জামান মিয়ার বিল্ডিংয়ের ভাড়াটিয়া মামুনুজ্জামান বাদী হয়ে ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চৈতী বেগম ও সুমন বিশ্বাসকে আসামী করে ভৈরব থানা একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। মামুনুজ্জামান ও অভিযুক্তরা একই বিল্ডিংয়ের প্রতিবেশি ভাড়াটিয়া। মামলা হওয়ার পর রাতেই অভিযুক্ত চৈতী ও সুমন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় মামুনুজ্জামান দম্পতি বাসা তালাবদ্ধ করে তাদের কর্মস্থলে চলে গেলে চোরচক্র দরজার হেজবল কেটে ঘরে ঢুকে চুুরি করে। প্রতিবেশির মাধ্যমে মামুনুজ্জামান অনুমানিক সাড়ে ১০টায় জানতে পারে তদের ঘরে চুরি হয়েছে। সংবাদ পেয়ে বাসায় ফিরে এসে মামুনুজ্জামান দেখতে পায় তাদের স্টিলের আলমারী ভেঙ্গে আলমারিতে থাকা নগদ ২০ হাজার টাকা, ৩টি স্বর্ণের চেইন, ৩ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ১টি স্বর্ণের বেসলাইট, ৩টি স্বর্ণের আংটিসহ সর্বমোট ৩ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে চোরচক্র।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী মামুনুজ্জামান বলেন, চৈতী বেগম ও সুমন বিশ্বাস আমার প্রতিবেশি। তারা এতোদিন স্বামী স্ত্রীর পরিচয়ে আমাদের প্রতিবেশি হিসেবে অপর একটি বাসায় থাকতো। আমার বাসায় চুরি হওয়ার পর তাদের প্রতি অআমার সন্দেহ জাগে। তাদের কার্যকলাপ আমার কাছে সন্দেহজনক ছিল। এ জন্য আমি তাদের উপর নজর রাখি। ৩ এপ্রিল সকালে জানতে পারি তারা দুইজন ভিন্ন ধর্মের এবং তারা স্বামী স্ত্রী নন। দীর্ঘদিন যাবৎ তারা অনৈতিক কর্মকান্ড করে আসীছল এ বাসায়। ইদানিং তারা বাসা ভাাড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছিলো। তাদের কর্মকাণ্ডে আমি নিশ্চিত হই তারাই আমার বাসায় চুরি করেছে। এ বিষয়ে আমি এর আগেও থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম এবং ৩ এপ্রিল চৈতী ও সুমনকে আসামী করে মামলা করেছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চৈতী বেগম বলেন, সুমন বিশ্বাস আমার পূর্ব পরিচিত। আমার ঘরে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে। ৪ বছর আগে আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমার স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর আমি সুমনের সাথে স্বামী স্ত্রী সেজে সংসারা করতে থাকি। সুমন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এবং সে বিবাহিত। যদিও তার বউয়ের সাথে ৬ বছর যাবত তার কোন সম্পর্ক নাই। আমি মুসলিম ও সে হিন্দু তাই আমাদের বিয়ে হয়নি। আমাদের উপর আনীত চুরির অভিযোগটি মিথ্যা দাবী করে চৈতী বেগম বলেন, আমাদের সম্পর্ক দেখে তারা সন্দ্যেহ করেছে। আমরা চুরি করিনি। আমাদেরকে ফাঁসানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, চুরির অভিযোগে ভিন্ন ধর্মের দুই নারী পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল। ৪ মাস যাবত স্বামী স্ত্রীর মিথ্যা পরিচয়ে একসাথে থাকছে। অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন ও চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।