পাঁচটি দেশেই বিশ্বের অর্ধেক গরিব লোক বাস করে। এই দেশগুলোর মধ্যে একটি বাংলাদেশ। বাকি দেশগুলো হলো ভারত, নাইজেরিয়া, কঙ্গো ও ইথিওপিয়া। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘পভার্টি অ্যান্ড শেয়ার প্রসপারিটি বা দারিদ্র্য ও সমৃদ্ধির অংশীদার ২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
ক্রয়ক্ষমতার সমতা অনুসারে (পিপিপি) যাঁদের দৈনিক আয় ১ ডলার ৯০ সেন্টের কম, তাঁদের হতদরিদ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটা আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যরেখা হিসেবে বিবেচিত হয়। বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারা বিশ্বে এখন দৈনিক ১ ডলার ৯০ সেন্টের কম আয় করেন এমন দরিদ্র লোকের সংখ্যা ৭৩ কোটি ৬০ লাখ। তাঁরা হতদরিদ্র হিসেবে বিবেচিত। এর মধ্যে উল্লেখিত পাঁচটি দেশেই বাস করে ৩৬ কোটি ৮০ লাখ গরিব লোক। এই হিসাব ২০১৫ সালের ভিত্তিতে তৈরি করা। তখনকার হিসাবে ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি—২৪ শতাংশ গরিব লোক থাকে। এ ছাড়া নাইজেরিয়ায় ১২ শতাংশ, কঙ্গোতে ৭ শতাংশ, ইথিওপিয়ায় ৪ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ৩ শতাংশ গরিব লোকের বাস।
বিশ্বব্যাংক ২০১৮ সালে এসে ওই পাঁচটি দেশে কত গরিব লোক বাস করে, সেই হিসাবও দিয়েছে। সেই হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১ কোটি ৬২ লাখ মানুষের দৈনিক আয় ১ ডলার ৯০ সেন্টের কম। আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যরেখা অনুযায়ী, এরা গরিব। এ ছাড়া ভারতে ৯ কোটি ৬৬ লাখ, নাইজেরিয়ায় ৯ কোটি ৯২ লাখ, কঙ্গোয় ৬ কোটি ৭ লাখ এবং ইথিওপিয়ায় ২ কোটি ১৯ লাখ গরিব মানুষ বাস করে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে সারা পৃথিবী থেকে দারিদ্র্য নির্মূল বা জিরো পভার্টির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর মানে হলো সারা বিশ্বের দারিদ্র্য হার ৩ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হবে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বিশ্বের অর্ধেক গরিব লোকের বসবাস করা পাঁচটি দেশ গরিবি হটানোর যুদ্ধে কতটা জয়ী হবে, এর একটি প্রক্ষেপণও দেওয়া হয়েছে। ২০৩০ সালে জিরো পভার্টির যুগেও নাইজেরিয়ায় ৯ কোটি ৫৮ লাখ মানুষ গরিব থাকবে। অর্থাৎ গরিবি হটানোর যুদ্ধে জয়ী হতে পারবে না দেশটি। এরপরের স্থানেই থাকবে কঙ্গো। সেখানে ৭ কোটি ১৫ লাখ গরিব মানুষ থেকে যাবে। এ ছাড়া ইথিওপিয়ায়ও দেড় কোটি গরিব মানুষ বাস করবে। এ ছাড়া ভারতে ৩৫ লাখ এবং বাংলাদেশে ৮ লাখ ৩০ হাজার গরিব মানুষ গরিব থাকবে ২০৩০ সালে।