দুই কোটি পাঁচ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণ মওকুফ করাতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টার সই জালিয়াতি করে দুই বছরের দণ্ড পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।
বুধবার (২৭ মার্চ) তিনি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৮ এ আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন কোয়েল বলেন, একটা মিথ্যা মামলায় দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়েছিল। তখন তিনি উপস্থিত ছিলেন না। আজ স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমরা জামিনের জন্য আপিল করব।
মামলার তথ্যানুযায়ী, মেসার্স এলিট আয়রন অ্যান্ড স্টিল জিপি শিট লিমিটেডের কাছে ঋণের দুই কোটি পাঁচ লাখ টাকা পায় উত্তরা ব্যাংক। পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ ঋণ মওকুফ করে দেওয়ার কথা বলে কোম্পানিটির কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা নেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমানের সই জাল করে ঋণ মওকুফের ব্যবস্থা নিতে উত্তরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর একটি চিঠি ইস্যু করেন। চিঠিতে ড. মসিউর রহমানের জায়গায় ডা. মশিউর রহমান লেখায় উত্তরা ব্যাংকের এমডির সন্দেহ হয়। তিনি চিঠিটি যাচাইয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠান। সেখানে প্রমাণিত হয়, এমন কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি।
এ ঘটনায় সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল করিম ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল ঢাকার বংশাল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় একই কর্মকর্তা ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু সহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- মেসার্স এলিট আয়রন অ্যান্ড স্টিল জিপি শিট লিমিডেট পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন, চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন, পরিচালক আমজাদ হোসেন ও মনোয়ার হোসেন।
২০১৫ সালের ১১ জুন মামলায় পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে অপর আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে আদালত এ মামলায় দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারায় উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।