কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এমকে বাশার রতন (৪২) হত্যার ঘটনায় উত্তেজনা বাড়ছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর, কটিয়াদীর জালালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে ঘটে যাওয়া একটি তুচ্ছ ঘটনার জেরে সংঘর্ষে রতন গুরুতর আহত হন। পরে ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। রতন স্থানীয় মৃত মতিউর রহমানের ছেলে।
তার মৃত্যুর পর, নিহতের স্ত্রী রুমা আক্তার কটিয়াদী মডেল থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন, যেখানে সবুজ নামের একজনকে প্রধান আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই মামলাটি তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তবে, হত্যাকাণ্ডের পরদিন থেকে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে।
নিহতের পরিবার অভিযোগ করে যে, মামলায় উল্লেখিত ৮ আসামীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৭-৮টি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয় এবং মূল্যবান আসবাবপত্র লুট করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, রতনের স্বজনরা প্রতিপক্ষের বাড়িতে এই হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, “এলাকায় ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। হামলার পর, আসামীপক্ষের লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।” একই সঙ্গে, অভিযোগ করা হচ্ছে যে, হামলাকারীরা আসামীর পরিবারের ফসলি জমি থেকেও ফসল কেটে নিয়েছে।
রতনের বড় ভাই ছিদ্দিকুর রহমান দাবি করেন, “আমরা হামলার সঙ্গে জড়িত নই। তৃতীয় পক্ষ এই ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। আমাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত।”
এদিকে, রতনের পরিবার আদালতে পাল্টা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম জানান, “দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কাজ করছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
এখন এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনের কার্যক্রমের দিকে তাকিয়ে আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রশাসন কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তা দেখার বিষয়। ইতিমধ্যে এলাকায় আতঙ্ক এবং অসন্তোষ বিরাজ করছে, যা এলাকার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং শান্তি বিঘ্নিত করছে।
সার্বিকভাবে, এই ঘটনায় কটিয়াদীর রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশে একটি নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, যা এলাকার জনজীবনে গভীর প্রভাব ফেলছে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের উচিত দ্রুত এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে পরিস্থিতি শান্ত করা সম্ভব হয় এবং এলাকার মানুষের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ দূর করা যায়।