রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইসলামি মহাসম্মেলন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় সম্মেলন শুরুর কথা থাকলেও ভোর থেকেই লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। এর ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষদের জন্য এটি এক বিশাল দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
ইসলামি সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হলেও এর প্রভাব শহরের অন্যান্য এলাকায়ও পড়েছে। সম্মেলনের সীমানা রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, জাতীয় প্রেস ক্লাব, শাহবাগসহ অন্যান্য এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় যানজট আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন, কাকরাইল, প্রেস ক্লাব, শিক্ষা ভবন এলাকা এবং সায়েন্সল্যাব, মিরপুর রোড, চাঁনখারপুল, পল্টন, মগবাজার, তেজগাঁও, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, বিজয় সরণি এলাকায় যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
অনেক যাত্রীকে বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। মশিউর রহমান নামে এক যাত্রী বলেন, “আমি বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে গুলিস্তানগামী বলাকা পরিবহনের বাসে উঠেছিলাম। কিন্তু বাসটি তেজগাঁওয়ের নাবিস্কো এলাকায় পৌঁছানোর পর যানজটে আটকা পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টা পর বাসটি মগবাজার রেল ক্রসিংয়ে পৌঁছায়। শেষে আমি বাস থেকে নেমে হেঁটে পল্টনের দিকে চলে আসি।” তিনি আরও জানান, “এমন পরিস্থিতিতে যারা পরিবার নিয়ে বের হয়েছেন, তাদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে।”
এদিকে, যানজটের কারণে রাজধানীজুড়ে মেট্রোরেলেও ভিড় বেড়েছে। হাজারো মাদরাসা ছাত্র, শিক্ষক এবং সম্মেলনে যোগদানকারী ধর্মপ্রাণ মানুষ মেট্রোরেলে চলাচল করছেন। মেট্রোরেলের ফার্মগেট স্টেশন থেকে টিএসসি স্টেশন পর্যন্ত যাত্রীরা জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসম্মেলন চলার কারণে সড়কপথে যানজট এমনকি মেট্রোরেলে প্রবল ভিড় সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র কামরুল ইসলাম বলেন, “পথে যানজট এড়াতে আমরা অনেকেই বাসের পরিবর্তে মেট্রোরেল বেছে নিয়েছি। তবে মেট্রোরেলে যাতায়াতকারীদের সংখ্যা এত বেশি যে, স্টেশনে দাঁড়ানোও কঠিন হয়ে পড়েছে।”
মহাসম্মেলন ও যানজটের কারণে রাজধানীতে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তি চোখে পড়ার মতো। এখন সবাই আশা করছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।