ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আজ (২০ নভেম্বর) অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, ঢাকার সাতটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি বাতিল করে একটি আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য শিগগিরই একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হবে।
২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, ঢাকা কলেজসহ সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়, যা পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। সেশনজট, পরীক্ষাসংক্রান্ত জটিলতা এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক সমস্যা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বারবার প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তাঁদের কলেজগুলোকে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
আজকের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “কয়েক বছর আগে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির সিদ্ধান্তটি ছিল অপরিণামদর্শী। সেই সিদ্ধান্তের পর থেকে এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা নানা ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। সেশনজট, পরীক্ষাসংক্রান্ত জটিলতা, এবং অন্যান্য প্রশাসনিক বাধার কারণে তাঁরা খুবই সমস্যায় পড়েছেন। আমি তাঁদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমি ভাবছিলাম, কীভাবে এই ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে মুক্ত করে তাদের একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায়। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছি এবং শিগগিরই একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে যাচ্ছি, যারা এই কলেজগুলোকে একটি স্বাধীন সত্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করবে।”
অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ উল্লেখ করেন, “এই কমিটি কলেজগুলোর একত্রিত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ তৈরির বিষয়ে সর্বোচ্চ স্তরের পরামর্শ দেবে। তাঁদের প্রতিবেদন অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”
তিনি আরও জানান, এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোর সমস্যা সমাধান হবে এবং শিক্ষার্থীরা একটি নতুন ও উন্নত পরিবেশে শিক্ষালাভ করতে পারবেন। শিক্ষার মান উন্নয়ন ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার জন্য এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
এছাড়াও, ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উপস্থিত থেকে শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “এতদিন যে সমস্যা ছিল, তা কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা কাজ করছি। আগামী দিনগুলোতে আমরা আরও উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।”