সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৭ অপরাহ্ন

কিশোরগঞ্জে মানসিক প্রতিবন্ধী নারী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা: সন্তানের পিতার পরিচয় অজানা

কিশোরগঞ্জ সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক হৃদয়বিদারক ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারী, যার নাম মনিরা বেগম (৩০), আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে নিশ্চিত হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নারীর পিতামাতার পরিচয় জানা না গেলেও তিনি নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার ভেলা নগর গ্রামের বাসিন্দা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত ৩-৪ মাস ধরে হাসপাতালের সিঁড়ির নিচে আশ্রয় নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন মনিরা। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তিনি কোনোমতে বেঁচে ছিলেন। সোমবার সকালে এক সিনিয়র নার্স তার শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন দেখে বিষয়টি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. নূর মো. শামছুল আলমকে জানান।

পরিচালকের নির্দেশে হাসপাতালের কর্মীরা তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। পরবর্তী আল্ট্রাসনোগ্রামে নিশ্চিত হয় যে, তিনি আট মাসের গর্ভবতী।

হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক মমতাজ বেগম বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিই। সিনিয়র আয়া রানুকা আক্তার এবং অন্যান্য কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করার। বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক যে, এমন একজন অসহায় নারীকে এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।”

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. নূর মো. শামছুল আলম জানান, “মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন এই নারীকে আমরা কয়েকদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করছিলাম। তার শারীরিক অবস্থা দেখে সন্দেহ হলে আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়। বর্তমানে গাইনী ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছে। তার সেবায় ৪ জন আয়া পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা সমাজসেবা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তাদের সহযোগিতা পেয়েছি।”

এই ঘটনাটি আমাদের সমাজের এক গভীর ব্যাধির চিত্র তুলে ধরে। অসহায় ও মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয়। অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এমন নারীদের সুরক্ষা ও সহায়তায় সমাজ ও প্রশাসনের আরও উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page