সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন

ইমাম নিয়োগ নিয়ে ডিসি-ইউএনওসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ‘পেশ ইমাম’ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গোলাম মোস্তফা নামে একজন চাকরি প্রার্থী মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুগ্ম জেলা জজ (প্রথম) আদালতে এ মামলাটি করেন। বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক, নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইসলামি ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ নিয়োগ পাওয়া ইমাম মো. যোবায়ের আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২৭ ফেরুয়ারি নাসিরনগর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইমাম পদে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৮০ নাম্বারের মধ্যে ৫১ নাম্বার পান মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা; কিন্তু তাকে ভাইভা পরীক্ষায় কোনো নম্বর দেওয়া হয়নি। তাছাড়াও শেখ ছায়েদুল হক নামে একজন ৫১ ও তোফায়েল আহম্মদ ৫০ লিখিত নাম্বার পান; কিন্তু যাকে প্রথম করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ওই পরীক্ষার্থী লিখিত পান ৩৩.৫০ নম্বর ও মৌখিক পরীক্ষায় পান ১৭.৬০ নম্বর। মোট ৫১.১ নম্বর পেয়ে ১ম হয়ে জুবায়েরকে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করে নিয়োগ বোর্ড। অথচ গোলাম মোস্তফা শুধু লিখিত পরীক্ষাই পেয়েছেন ৫১ নাম্বার।

এছাড়াও খাদেম পদে কোরাম পূর্ণ করতে ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখ আবেদনের সময় শেষ হলেও ২৭ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক চালান জমা দিয়ে আবেদন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুয়াজ্জিন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারীর ভাইকে, যেটি নিয়েও অভিযোগ রয়েছে।

খাদেম পদে আবেদনকারী আবুল কাশেম বলেন, যে দিন আবেদনের শেষ তারিখ (২৬ ফেব্রুয়ারি) ছিল সেদিন গিয়ে ব্যাংক বন্ধ পাই। পরের দিন (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে চালান জমা দিয়ে আবেদন করি।

ভুক্তভোগী মামলার বাদী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি একজন হাফেজ। ১৫-১৬ বছর ধরে ঢাকায় খতমে তারাবি নামাজ পড়াচ্ছি। আমি আগেও নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলাম। আমার বাবা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এবারো লিখিত পরীক্ষায় প্রথম হয়েছি। দুই-একটি প্রশ্ন ছাড়া সবটির উত্তর দিয়েছি। আমি কিভাবে শূন্য পেতে পারি। চোখের সামনে অনিয়ম হয়েছে। এছাড়াও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আমি ন্যায়বিচারের আশায় আদালতে মামলা দায়ের করেছি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নাসিরনগর উপজেলা সুপারভাইজার মাহমুদুন্নবী বলেন, অভিযোগকারী লিখিত পরীক্ষায় ভালো করলেও মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করতে পারেননি।

তিনি বলেন, তাকে ভাইভা বোর্ডে তিনি কিতাবে অনেক ভুল করেছেন। এ কারণে বোর্ডের আটজনের মধ্যে ছয়জন কোনো নাম্বার দেয়নি। দুজন নাম মাত্র নম্বর দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর পেলেও ভাইভা পরীক্ষায় ভালো করেছেন।

ইমাম পদে প্রথমস্থান হওয়া মামলার প্রধান আসামি মো. জুবায়ের আহম্মেদ বলেন, আটজনের নিয়োগ বোর্ড পরীক্ষা নিয়েছে। আমি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। ফলাফল প্রকাশে আমি প্রথমস্থান অধিকার করেছি। আমাকে এখনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি। নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে তিনি দাবি করেছেন।

নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন নাসরীন বলেন, নিয়োগের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ আছে। অভিযোগটি জেলা প্রশাসক তদন্ত করছেন। নিয়োগ কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার খবর পেয়েছি। লিখিতভাবে পায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page