জয়নাল আবেদীন রিটন, ভৈরব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মা-বাবাকে মারধরের অভিযোগে মাদকাসক্ত ছেলেকে ৩ মাসের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ রবিবার (১৬ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫ টায় সাজা প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিদওয়ান আহমেদ রাফি।

অভিযুক্ত ছেলে ফজলে রাব্বী (২৩)। অভিযোগকারী পিতা মো. আল আমিন মিয়া। তিনি পৌর শহরের কমলপুর পশ্চিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ছেলে ফজলে রাব্বী একজন মাদক সেবী। মাদকের টাকার জন্য প্রায় সময় সে তার বাবা ও মাকে অত্যাচার করে থাকে। এমনকি নিজ ঘরের জিনিসপত্র চুরি করে বিক্রি করে দেয় এমনকি টাকা না দিলে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ১৫ মার্চ টাকা না পেয়ে বাবা মাকে মারধর করে আহত করে। নিরুপায় হয়ে বাবা মা উপজেলা সহকারী কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নির্দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর খ সার্কেল ভৈরব শাখার পরিদর্শক মাসুদুর রহমান অভিযুক্ত ফজলে রাব্বিকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। আটকের পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে ৩ মাসের বিনাশ্রম সাজা দেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্তের পিতা আলামিন মিয়া বলেন, সংসারে আমার ১ ছেলে এক মেয়ে। আমি একটি বেসরকারি হাসপাতালে জেনারেটর অপারেটর হিসেবে কাজ করি। আমার ছেলে মাদক সেবনের টাকার জন্য প্রায়ই আমাকে আর আমার স্ত্রীকে মারধর করে। ১৫ মার্চ আমার কাছে মাদকের জন্য ৩৫শ টাকা চায়। আমি না দেয়ায় আমাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে জখম করে। আমার বউ ফেরাতে গেলে তাকেও মারধর করে। প্রতিদিন কোনো না কোন ভাবে আমাকে ও আমার বউকে মারধর করে। এমনকি ঘরে থাকা আমার ভাগ্নে ও ছোট নাতিকেও সে মারধর করে। এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেও রাব্বিকে ৩ মাসের সাজা দিয়ে ছিল ম্যাজিস্ট্রেট। বাড়ি এসেই আবারো মাদকের টাকার জন্য মারধর শুরু করেছে। আমি নিরুপায় হয়ে প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি। আমি চাই আমার ছেলেকে ৬ মাস না হয় ১ বছর সাজা দেয়া হোক।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিদওয়ান আহমেদ রাফি বলেন, আজ সকালে আহত অবস্থায় অভিযুক্তের বাবা মা ছেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। পরবর্তীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর খ সার্কেল ভৈরব শাখার সহায়তায় বিকালে ফজলে রাব্বিকে আটক করা হয়। আটকের সময়ও তার কাছে মাদক সেবনের গাঁজা পাওয়া যায়। মা বাবাকে মারধরের অভিযোগে ফজলে রাব্বিকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ মাদকে বয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে সন্তানদের প্রতি সকল বাবা মাকে নজরদারি রাখতে হবে।